জ্ঞানচক্ষু গল্প – প্রশ্নোত্তর
দশম শ্রেণির বাংলা পাঠ্য একালের কথাসাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবীর জ্ঞানচক্ষু গল্প অত্যন্ত মনোরম একটি গল্প। আমরা এই আলোচনায় গল্পটি থেকে ছাত্রছাত্রীদের উপযোগী নানা তথ্য পরিবেশন করেছি। মূল প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রবেশের আগে আমরা লেখিকার সম্পর্কে সাধারণ কিছু তথ্য জেনে নেব।
সেই সঙ্গে আমরা আলোচ্য গল্পের প্রাসঙ্গিক কিছু তথ্যও জেনে নেব। যারা এই বিষয়ের উপর মক টেস্ট দিতে চাও তারা এখানে ক্লিক কর। চলো, আমরা মূল আলোচনায় চলে যাই।
জ্ঞানচক্ষু গল্প – প্রাসঙ্গিক তথ্য
জ্ঞানচক্ষু গল্পটি আশাপূর্ণা দেবীর ‘কুমকুম’ গল্পগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে।
গল্পটি লেখিকার জবানিতে রচিত।
তপনের লেখা গল্পের নাম ‘প্রথম দিন’।
তপনের গল্প প্রকাশিত হয়েছিল ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায়।
এককথায় উত্তর
১. জ্ঞানচক্ষু গল্পটি লেখিকার কোন গল্পগ্রন্থ থেকে নেওয়া ?
উঃ কুমকুম
২. আলোচ্য গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্রটির নাম কী ?
উঃ তপন
৩. ‘এত কাছ থেকে কখনো দেখেনি তপন’ – কী না দেখার কথা বলা হয়েছে ?
উঃ জলজ্যান্ত কোনো লেখককে
৪. সাধারণ বিশ্বাসে রত্নের মূল্য কে বোঝে ?
উঃ জহুরী
৫. আলোচ্য গল্পটিতে কোন পত্রিকার কথা পাওয়া যায় ?
উঃ সন্ধ্যাতারা
৬. ‘তোমার গল্প তো দিব্যি হয়েছে’ – বক্তা কে ?
উঃ মেসোমশাই
৭. তপনকে তার মা বিয়েবাড়িতেও কোনটি আনিয়েছেন ?
উঃ হোমটাস্কের খাতা
৮. তপনের থেকে তার ছোটোমাসি বয়সে কতখানি বড় ?
উঃ বছর আষ্টেকের
৯. ‘ও মা এ তো বেশ লিখেছিস রে’ – তপনের উদ্দেশ্যে কথাটি কার ?
উঃ তপনের মাসির
১০. ‘সন্ধ্যাতারা’য় প্রকাশিত তপনের গল্পটির নাম কী ?
উঃ প্রথম দিন
১১. ‘একাসনে বসে লিখেও ফেলল আস্ত একটা গল্প’ – তপন গল্পটা কোথায় বসে লিখল ?
উঃ তিনতলার সিঁড়িতে
১২. ‘তপনকে এখন লেখক বলা চলে’ – তপনের পুরো নাম কী ?
উঃ শ্রী তপন কুমার রায়
১৩. ‘ক্রমশ ও কথাটাও ছড়িয়ে পড়ে’ – কোন কথা ?
উঃ কারেকশানের কথা
১৪. আলোচ্য গল্পে ব্যবহৃত প্রবাদ প্রবচনটি হল –
উঃ পায়া ভারী
১৫. তপনের কাছে কোনটা ছিল অপমানের ?
উঃ গল্প পড়তে বসে অন্যের লেখা লাইন পড়া
ব্যাখ্যামূলক প্রশ্নোত্তর
১. রত্নের মূল্য জহুরির কাছেই – কোন্ গল্পের অংশ ? উদ্ধৃতিটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ উদ্ধৃতাংশটি আশাপূর্ণা দেবীর লেখা জ্ঞানচক্ষু গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে।
রত্ন হল মূল্যবান মণিমাণিক্য। যিনি এই রত্নের গুণাগুণ বিচার করেন তিনি হলেন জহুরি। আলোচ্য গল্পে তপন একটি গল্প লিখে তার ছোটোমাসিকে দেখায়। ছোটোমাসি তা মেসোমশাইকে দেখায়। মেসোমশাইকে তপনের গল্প দেখানোয় প্রথম দিকটায় তপন আপত্তি করলেও মনে মনে খুশি হয়েছিল। কারণ সে জানত, তার গল্পের মর্ম কেবল নতুন মেসোমশাই-ই অনুধাবন করতে পারবেন। এখানে ‘রত্ন’ বলতে তপনের গল্প আর ‘জহুরি’ বলতে তপনের নতুন মেসোমশাইকে বোঝানো হয়েছে।
২. তপনকে এখন লেখক বলা চলে – এমন মনে হওয়ার কারণ কী ?
উত্তরঃ ছোটোবেলা থেকেই তপনের সাহিত্যের প্রতি অনুরাগ। কিন্তু তার জানা ছিল না যে গল্প লেখেন যারা তারা আর পাঁচজনের মতোই রক্ত-মাংসে গড়া সাধারণ মানুষ। নতুন ‘লেখক’ মেসোমশাইকে দেখে তপনের সেই ভুল ভাঙে। গভীর উৎসাহে নির্জন দুপুরে মামাবাড়ির তিনতলার সিঁড়িতে একাসনে সে একটি গল্প লিখে ফেলে। লেখা সম্পূর্ণ হলে তার সারা শরীরে উত্তেজনার শিহরণ বয়ে যায়। নিজের লেখার প্রতি তপনের আত্মবিশ্বাস জাগে আর তার নিজেকে লেখক বলে ভাবতে তৃপ্তি পায় সে।
৩. পৃথিবীতে এমন অলৌকিক ঘটনাও ঘটে – কোন ঘটনাকে ‘অলৌকিক ঘটনা’ বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ জ্ঞানচক্ষু গল্পের তপন কোনোদিন ভাবতে পারেনি তার লেখা গল্প কোনো পত্রিকায় ছাপা হতে পারে। কিন্তু তার ছোটো মেসোর বদান্যতায় ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় যখন তপনের লেখা ‘প্রথম দিন’ গল্পটি ছাপার অক্ষরে প্রকাশিত হয় তখন তপন বিহ্বল হয়ে পড়ে। তার কাছে এই ঘটনা কোনো অলৌকিক ঘটনার থেকে কম কিছু নয়।
৪. ক্রমশ ও কথাটাও ছড়িয়ে পড়ে – কোন কথা ছড়িয়ে পড়েছিল ? কথাটি ছড়িয়ে পড়ার ফল কী হয়েছিল ?
উত্তরঃ ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পে ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় প্রকাশিত তপনের গল্পটি যে তার ছোটো মেসোমশাই কারেকশান করে ছাপতে দিয়েছিলেন –এই কথাটাই ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ে।
এই কারেকশানের কথাটা বাড়িতে ছড়িয়ে পড়ায় তপনের গল্প লেখার কৃতিত্ব যেন খানিকটা ম্লান হয়ে পড়ে। বাড়িতে তপনের বাবা, কাকারা তপনের গল্পে তার ছোটো মেসোমশাইয়ের হাতের ছোঁয়াকেই অধিক গুরুত্ব দিতে থাকেন। শুধু তাই নয়, আলোচনায় তপনের গল্পের কথা যখনই ওঠে তখনই ঐ মেসোমশাইয়ের মহতী মানসিকতার দিকটাই উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।
৫. কীরে তোর দেখছি পায়া ভারী হয়ে গেল – ‘পায়া ভারী’ প্রবাদটির অর্থ কী ? যার উদ্দেশ্যে কথাগুলি বলা তার কি সত্যিই পায়া ভারী হয়েছিল ? – বক্তব্যের সমর্থনে যুক্তি দাও।
উত্তরঃ জ্ঞানচক্ষু গল্পে উল্লেখিত ‘পায়া ভারী’ প্রবাদটির অর্থ হল আপন কৃতিত্বের জন্য অহংকার করা।
আলোচ্য রচনায় কথাগুলি তপনের উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে। না, তপনের সত্য সত্যই পায়া ভারী হয়নি। তপনের গল্প ‘প্রথম দিন’ প্রকাশিত হয়েছিল ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায়। এতে বাড়ির সকলে উৎসুক হয়ে তপনকে গল্পটি পাঠ করে শোনাতে বলে। মায়ের অনুরোধে তপন গল্পটি পড়া শুরু করেও থেমে যায়। আসলে ঐ লেখাগুলির মধ্যে তপন নিজেকে খুঁজে পাচ্ছিল না –তার মেসোমশাই যে আগাগোড়া গল্পের পরিবর্তন করে দিয়েছেন। তপন তাই গল্পটা আর পড়তে পারছিল না। এখানে তপনের পায়া ভারী হওয়ার কোনো প্রশ্নই নেই।
অন্যান্য আলোচনা
| প্রশ্নোত্তরের বিষয় | LINK |
|---|---|
| অসুখী একজন | Click Here |
| আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি | Click Here |
| আফ্রিকা | Click Here |
| হারিয়ে যাওয়া কালি কলম | Click Here |
| বহুরূপী | Click Here |
| অভিষেক | Click Here |
| সিরাজদৌল্লা | Click Here |
| প্রলয়োল্লাস | Click Here |
| পথের দাবী | Click Here |
| অদল বদল | Click Here |
| সিন্ধুতীরে | Click Here |
| বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান | Click Here |
| অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান | Click Here |
| নদীর বিদ্রোহ | Click Here |
আমাদের ইউটিউব চ্যানেল

