সাহিত্য সঞ্চয়ন (IX)

ইলিয়াস – লিও তলস্তয়

রাশিয়ান কথাসাহিত্যিক লিও তলস্তয়ের লেখা ছোটোগল্প ইলিয়াস। গল্পটি নবম শ্রেণির পাঠ্য। মূল ভাষা থেকে এটি বাংলায় অনূদিত। আমরা এর আগে কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি এবং ধীবর বৃত্তান্ত নিয়ে আলোচনা করেছি। আজ আমরা এই পোস্টে উক্ত গল্পের মূল বিষয় সহ আনুষঙ্গিক তথ্য জেনে নেওয়ার চেষ্টা করব। আশা করি পোস্টটি ছাত্রছাত্রীদের চাহিদা মেটাতে সক্ষম হবে।

ইলিয়াস – বিষয়বস্তু

গল্পের উৎস – Twenty Three Tales গল্পগ্রন্থ। গল্পটি বাংলায় অনুবাদ করেছেন মণীন্দ্র দত্ত।

প্রশ্নোত্তর পর্ব – এককথায় উত্তর

১. ইলিয়াসের বিয়ের কত দিন পর তার বাবা মারা যান ?
উঃ এক বছর

২. বাবা মারা যাবার সময় তার কতগুলি ঘোড়া ও গরু ছিল ?
উঃ সাতটি ঘোড়া ও দুটি গরু

৩. বাবা মারা যাবার সময় সম্পত্তি হিসেবে ইলিয়াসের কতগুলি ভেড়া ছিল ?
উঃ কুড়িটি

৪. ইলিয়াসের স্ত্রীর নাম কী ?
উঃ শামশেমাগী

৫. ইলিয়াস ও তার স্ত্রী একটানা কতদিন পরিশ্রম করে অনেক সম্পত্তি করেছিল ?
উঃ পঁয়ত্রিশ বছর

৬. একটানা পরিশ্রম করার পর ইলিয়সের কতগুলি ঘোড়া হয়েছিল ?
উঃ দুশোটি

৭. একটানা পরিশ্রম করার পর তার কতগুলি ঘোড়া বেড়েছিল ?
উঃ একশো তিরানব্বইটি

৮. একটানা পরিশ্রম করার পর ইলিয়াসের কতগুলি গরু হয়েছিল ?
উঃ দেড়শোটি

৯. একটানা পরিশ্রম করার পর ইলিয়সের কতগুলি ভেড়া হয়েছিল ?
উঃ বারোশোটি

১০. ইলিয়াসের মোট সন্তান সংখ্যা কয়টি ছিল ?
উঃ তিনটি

১১. ইলিয়াসের দুর্দশা তার কত বছর বয়সে চরমে উঠেছিল ?
উঃ সত্তর বছর বয়সে

১২. মারামারিতে মারা গিয়েছিল কে ?
উঃ বড় ছেলে

১৩. সত্তর বছর বয়সে ইলিয়স তার কোন সম্পত্তিটি বিক্রি করেছিল ?
উঃ পশমের কোট, কম্বল, ঘোড়ার জিন

১৪. উভয়ের বৃদ্ধাবস্থায় কে আশ্রয় দিয়েছিল ?
উঃ মহম্মদ শা

১৫. ‘এ বিষয়ে তিনিই পুরো সত্য বলতে পারবেন’ – এখানে ‘তিনি’ কে ?
উঃ শামশেমাগী

ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন

১. ইলিয়াসের দুর্দশার কারণ কী ছিল তা আলোচনা কর।

উঃ ইলিয়াস উফা প্রদেশের একজন বাসকির ছিলেন। তিনি দীর্ঘ পঁয়ত্রিশ বছরের কঠিন পরিশ্রমের কারণে বিপুল সম্পত্তির অধিকারী হয়েছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন কারণে তার সেই সম্পত্তিতে টান পড়ে। তার দুর্দশা উপস্থিত হয়।

ইলিয়সের দুর্দশার কারণগুলি হল –

(১) ইলিয়াসদের অবস্থার উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে তার ছেলেরা বিলাসী হয়ে ওঠে। তারা আগের মতো আর পরিশ্রম করে না।

(২) বড়ো ছেলেটি মারামারি করে মারা যায়। ছোটো ছেলে এক ঝগড়াটে বউ বিয়ে করে আনে। তাদের বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। ছেলেকে একটি বাড়ি ও কিছু গরু ঘোড়াও দেওয়া হয়। এর ফলেও তার সম্পত্তিতে টান পড়েছিল।

(৩) ইলিয়সের ভেড়ার পালে মড়ক লেগে যাওয়ার কারণে অনেকগুলি ভেড়ার মৃত্যু ঘটে। আবার তারপরের বছরই দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়, ফলে বহু গরু মারা যায়।

(৪) ইলিয়াসের ভালো ভালো ঘোড়াগুলিকে কিরবিজরা চুরি করে নেয় ফলে ইলিয়াসের অবস্থা আরো খারাপ হয়ে ওঠে।

(৫) সত্তর বছর বয়সে তাদের সংসারে অভাব দেখা দেয়। শেষ সম্বলটুকু বিক্রি করে সর্বস্বান্ত হয়ে যায়। এইভাবে ইলিয়সদের দুর্দশা চরম পর্যায়ে পৌঁছে যায়।

২. ‘এটা খুবই জ্ঞানের কথা’ – কার, কোন কথাকে ‘জ্ঞানের কথা’ বলা হয়েছে?’ 

উঃ ইলিয়াস এবং তাঁর স্ত্রী তাদের জীবনের বিশেষ অভিজ্ঞতা, মহম্মদ শাহর বাড়িতে আসা অতিথিদের সাথে ভাগ করে নিচ্ছিলেন। তারা বলেন, যখন তারা ধনী ছিলেন, সেই সময় তাদের জীবনে অর্থসুখ থাকলেও জীবনে কোনো প্রকার শান্তি ছিলনা – মন সর্বদাই দুশ্চিন্তায় আচ্ছন্ন থাকতো। কিন্তু তারা দরিদ্র হয়ে মনিবের বাড়ি কাজ করার সময় প্রকৃত সুখের সন্ধান পেয়েছেন, কারণ আজ তাদের কোনো রকম দুশ্চিন্তা নেই।

তাদের মতে, এটাই প্রকৃত জীবন। তারা প্রথমে সব ধন-সম্পত্তি হারিয়ে দুঃখ পেয়েছিলেন, কিন্তু ঈশ্বরের আশীর্বাদে জীবনের প্রকৃত সত্যকে উপলব্ধি করতে পেরেছেন। ইলিয়াসের এই কথাগুলিকেই মোল্লা সাহেব ‘জ্ঞানের কথা’ বলে উল্লেখ করেছেন।

আমাদের ইউটিউব চ্যানেল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!